ও মেয়ে
-মৌসুমী সাহা মহালানাবীশ
ও মেয়ে!
তুই পরের ঘরকে আপন করলি,
আপন ঘরকে পর!
থুরি, আপন ঘর বলি কেনো
সেতো বাপের ঘর।
ও মেয়ে!
তুই সিঁথি রাঙাস লাল সিঁদুরে,
প্রতিদিন স্নানের পরে!
স্বামীর হবে দীর্ঘায়ু,
এমনটা মনে করে ?
ও মেয়ে!
তুই শাঁখা পরিস,মেহেন্দি পরিস
হাত দুখানি তোর!
মেহেন্দিতেও লেখা থাকে,
স্বামীর নামের আদ্য-অক্ষর।
ও মেয়ে!
তোর গায়ে হলুদ,
সেও স্বামীর নামে!
গলা তোর, মঙ্গলসূত্র
তার নামেতেই দোলে।
তোর শ্বাস যে বিষের জ্বালা,
তাইতো থাকে নথের পালা
”সধবার” আশীর্বাদ সেও স্বামীর নামে!
বন্দনা যখনই করিস গুরুজনের চরনে।
দশমীর সিঁদুর খেলা, নানান রকম ব্রত
সবই থাকে স্বামীর নামে
তুই যে কেবল ছুতো।
গর্ভ তোর, রক্ত তোর, দুধ তোর জানি
সন্তান যে স্বামীর নামের সবাই তাহা মানি
সন্তান যদি বেপরোয়া হয় দোষটি তোর ঘাড়ে
বাবার রক্ত বইছে যে তাই সন্তান প্রতিষ্ঠিত হলো রে।
বাড়ির গেটে নেম প্লেটেও নেইকো তোর নাম,
তোর পদবী,তোর গোত্রের কে আর দিলো দাম!
ও মেয়ে তোর পরিচয় জানতে ইচ্ছে করে
সারা জীবন বেঁচেই গেলি, মরলি নিজের তরে।
তুই যে সব করেই গেলি
স্বামীর মঙ্গল কামনায়,
একবারও কি প্রশ্ন করেছিস
নিজেকে আয়নায় ?
সে তোর জন্য কি করেছে এতো দিনের পরে ?
একটাও কি ব্রত ছিল তোর নামটি উজার করে ?
কোন চিহ্ন বহন করেছে তোর মঙ্গল কামনায় ?
প্রশ্ন হানিস মনের ঘরে তুই কি নিরুপায় ?
এতো কিছুর পরেও যখন আঙুল ওঠে ঘরে
পরকে তুই আপন ভেবে নিয়েছিস মা-বাবা করে!
তারপরেতেও পর রইলি, হইলি নারে আপন
স্কুল কলেজের দিনগুলো যে সংসারেতে স্বপণ।
ও মেয়ে!
আর ফেলিস নারে লুকিয়ে চোখের জল,
সর্বশেষে উপাধি পাবি—–
”ঘরের শত্রু বিভীষণ”
(সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নহে)
অপূর্ব লাগলো বন্ধু
শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য বন্ধু
অতুলনীয়